তৃণভূমি আর সূর্যমুখী চুপচাপ উসুক ছিলো প্রথম পর্যায়ে। বনাঞ্চল পার হয়ে একটি গল্পগাড়ি লোকালয় অতিক্রম করবার কথা। আসলেই কি অতিক্রম করেছে এই নিয়ে চতুর ও মেধাবী লোকজনের সন্দেহ বিস্তারিত। বিষয়টি বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ মাধ্যমের চ্যালেঞ্জ হওয়া সত্ত্বেও সূর্যমূখি কেবল হাসে। ঠিক তখনই কিছু সংখ্যক ধবল মেঘপুঞ্জ আশিতলা দালানের সাথে গোপন কূটনীতির পাঠ বিনিময় করে গেছে।

 

তথ্য উদ্ধারের বিচ্যুতিসহ যা কিছু প্রায় সত্য ধরা হয়েছে তার বিবৃতি এমন যে, মনুষ্য রূপায়িত যে কয়জন যাত্রী, তাদের সাথে নাম ধারণকৃত যথাক্রমে- যৌবনরঙ দুপুর, বনজ গন্ধ, বিথুবেন সুর, জীবনানন্দ অনুভূতি, প্রভাতি সুন্দরবন, জন স্টেইনবেক প্রেম এবং কটনউড পাহাড়ের ঢেউ। কাল মার্কস-এর শুদ্ধতম আর্তিও ওই গল্পগাড়িতে থাকবার কথা জানা গেছে।

 

সূর্যমুখী ফুল তার সকল পবিত্র দুষ্টুমিসহ আজীবন সূর্যমুখী। গল্পগাড়িটির অভূতপূর্ব অস্তিত্ব, বিস্ময়কর মেকানিজম, অভিনব গতি এবং যাত্রীদের আন্তরিক উদ্দেশ্য অধিকাংশ অবহিত সূর্যমুখী। কিন্তু কারো সাধ্য নেই অপরাধী বানিয়ে সূর্যমুখীকে ইন্টারোগেশন সেলে নিয়ে যাওয়া। তৃণভূমির দ্বিতীয় পর্যায়ে লতাগুল্ম হৈ হৈ পোহায় যথানিয়মে। সালোকসংশ্লেষণে পুষ্ট সবুজ পাতা বিধিসম্মত।

 

জেলিফিসদের জলঢেউ সমেত তা তা থৈ থৈ কোনো তাপর্য দিতে পারে না ক্ষুধার্ত ফুটফুটে চিল সন্তানদের। আর্কটিক শিয়াল দৃশ্যতঃ শুভ্র হলেও আপাদমস্তক শিয়াল কিন্তু ডেজার্ট ফক্স না। সূর্যালোকের স্পর্শসুখে তুষার পাহাড় ধ্বসে, পেঙ্গুইন বাতি নিভে যুক্তি পতনের রহস্য নিয়ে কী কারণ কী কারণ, তার কিঞ্চিত উষ্ণ তথ্য শীতের পাখিরা দিয়ে গেছে হয়তো সূর্যমুখীর কাছে।

 

দুঃখে উদ্ভাসিত কবি। সূর্যমুখীর মায়াতে ইহলৌকিক সারমর্ম। শান্তির বিন্যাস ঝিলমিল। কবি জ্বলতে জ্বলতে জ্বলতে আলোকপাথর। তবু জানতে চান, গল্পগাড়ি অতিক্রম করলো কি! অতিক্রান্ত হয় কোন্ গন্তব্যের পর? স্বপ্নভাঙার অন্য নাম গন্তব্য! গল্পগাড়ি কি অভিকর্ষ সিঁড়িতে নেমে যায় আকাশে নামবে বলে। সূর্যমুখী কী কারণ সূর্যমুখী! অনিয়মেও নিয়ম গ্রন্থিত কবি ধ্যান সেবন করলেন। তিনটি মনোলিথ সময় কণা ভেঙে সামনে আসে- আব্রাহাম, আইজাক, জেকব। যেন ভাষাহীন জানিয়ে দিলো, গল্পগাড়ি এখনো অতিক্রম করেনি লোকালয়। রূপ বদলের সংসারে থাকে; অতীতে যাবে, আগামীতে ছিলো।

 

তারপর কবি'র প্রশ্নের ভেতর থেকে স্বপ্নের ঘ্রাণ ভাষার ব্যঞ্জন খুঁজতে থাকে...